নতুন ওয়াক্ফ আইন নিয়ে ভারতীয় সুপ্রিম কোর্টে সরকারের নরম সুর


নতুন ওয়াক্ফ আইন নিয়ে ভারতের শীর্ষ আদালতে সরকারের সুর নরম হয়েছে। সর্বোচ্চ আদালতকে সরকারের তরফ থেকে জানানো হয়েছে, ওয়াক্ফ আইন অনুযায়ী ভারতের কেন্দ্রীয় সরকার এখনই কোনো পদক্ষেপ নেবে না।

আজ বৃহস্পতিবার (১৭ এপ্রিল) দেশটির সুপ্রিম কোর্টে কেন্দ্রীয় সরকার জানিয়েছে, পরবর্তী শুনানি পর্যন্ত নতুন আইন অনুযায়ী কেন্দ্রীয় ওয়াক্ফ কাউন্সিল ও রাজ্য ওয়াক্ফ বোর্ডে কোনো নতুন নিয়োগ হবে না।

পাশাপাশি, ওয়াক্ফ সম্পত্তি বলে যা ঘোষিত এবং যে সম্পত্তি ওয়াক্ফর বলে মানুষ বিশ্বাস ও ব্যবহার করে আসছেন, দুটির কোনোটিতেই কোনো রকম পরিবর্তন করা হবে না।

সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি সঞ্জীব খান্নার নেতৃত্বাধীন বেঞ্চ ওয়াক্ফ মামলার পরবর্তী শুনানির দিন ধার্য করেছেন আগামী ৫ মে।

মামলাকারীদের বেঞ্চ জানিয়েছেন, যত আবেদন জমা পড়েছে সেগুলোর মধ্য থেকে পাঁচটি বেছে নিয়ে প্রধান আবেদন হিসেবে গণ্য করা হবে। বাকিগুলো বিবেচিত হয়েছে বলে ধরে নেওয়া হবে। প্রধান বিচারপতি বলেন, ১০০ থেকে ২০০ আবেদনের বিচার করা সম্ভব নয়।

ওয়াক্ফ আইনের সাংবিধানিক বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে ইতিমধ্যেই সুপ্রিম কোর্টে ৭২টি আবেদন নথিভুক্ত হয়েছে। প্রতিদিনই নতুন নতুন আবেদন জমা পড়ছে।

আরও পড়ুনWaqf: এর অর্থ ওয়াক্ফ

এর আগে গতকাল বুধবার একগুচ্ছ মামলার শুনানির প্রথম দিনেই প্রধান বিচারপতি সঞ্জীব খান্না, বিচারপতি সঞ্জয় কুমার ও বিচারপতি কে ভি বিশ্বনাথন নতুন আইন নিয়ে বেশ কিছু পর্যবেক্ষন করেছিলেন। নিজেদের মনোভাবও প্রকাশ করেছিলেন।

যেমন প্রশ্ন তোলা হয়েছিল ওয়াক্ফ কাউন্সিল ও বোর্ডে অমুসলিম সদস্যদের অন্তর্ভুক্তি নিয়ে। সরকারের কাছে বিচারপতিরা জানতে চেয়েছিলেন, হিন্দু দেবস্থান বা ধর্মীয় সংস্থা পরিচালনায় অহিন্দুরা থাকতে পারেন কি না; কিংবা পরিচালনায় অহিন্দুদের অন্তর্ভুক্তিতে সরকার সম্মত কি না।

বিচারপতিরা এই প্রশ্নও করেছিলেন, ব্রিটিশ আমলে ওয়াক্ফ আইন প্রবর্তনের অনেক আগে থেকে নথিহীন যেসব সম্পত্তি ওয়াক্‌ফর বলে ব্যবহৃত হয়ে আসছে, সেসব নথিভুক্ত কীভাবে করা সম্ভব? পাশাপাশি নথিভুক্ত না করা গেলে সেই সম্পত্তি কী করে ওয়াক্‌ফর নয় বলে ঘোষণা করা যায়? তাতে সমস্যার পাহাড় তৈরি হবে।

বেঞ্চের মনোভাব বুঝেই বৃহস্পতিবার সলিসিটর জেনারেল তুষার মেহতা শুনানির শুরুতেই জানিয়ে দেন, পরবর্তী শুনানি পর্যন্ত সরকার নতুন ওয়াক্ফ আইনে কাউন্সিল ও বোর্ডে কোনো নতুন নিয়োগ করবে না। কোনো ওয়াক্ফ সম্পত্তির বদলও ঘটানো হবে না।

সলিসিটর জেনারেল জানান, কেন্দ্রের কাছে প্রচুর তথ্য জমা পড়েছে। সেখানে দেখা যাচ্ছে, বহু সম্পত্তি ওয়াক্ফ হিসেবে নথিভুক্ত রয়েছে, বহু সম্পত্তি নিয়ে অনেক মানুষের মনে প্রশ্নও আছে। এসব বিষয়ে প্রতিবেদন জমা দেওয়ার জন্য তিনি এক সপ্তাহ সময় চান।

কেন্দ্রকে সেই সময় গ্রাহ্য করেন সুপ্রিম কোর্ট। কেন্দ্রের প্রতিবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে আবেদনকারীরাও তাঁদের মতামত জানাতে পাঁচ দিন সময় পাবেন। সেই হিসাবে পরবর্তী শুনানির দিন ধার্য হয় ৫ মে। ওই শুনানির পর সুপ্রিম কোর্ট অন্তর্বর্তী নির্দেশ জারি করবেন।



Source link

Share this post

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *