হাইকোর্টের ৩ বিচারপতির পদত্যাগ


দেশের সর্বোচ্চ আদালত সুপ্রিম কোর্টের হাইকোর্ট বিভাগের তিনজন বিচারপতি পদত্যাগ করেছেন। পদত্যাগপত্র গ্রহণ করেছেন রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন।

আজ মঙ্গলবার (১৯ নভেম্বর) তাঁরা পদত্যাগ করেন। পদত্যাগ করা তিন বিচারপতি হলেন- বিচারপতি সালমা মাসুদ চেীধুরী, বিচারপতি কাজী রেজা-উল-হক, বিচারপতি এ. কে. এম. জহিরুল হক।

জানা গেছে, তাঁদের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ রয়েছে।

সম্প্রতি বিচারকাজের বাইরে থাকা হাইকোর্টের ১৫ বিচারপতির বিরুদ্ধে দুর্নীতি-অনিয়মসহ পেশাগত অসদাচরণের অভিযোগে তদন্ত শুরু করে সুপ্রিম জুডিশিয়াল কাউন্সিল। এর মধ্যে গত ১৭ অক্টোবর বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনকারীদের দাবির মুখে বিচারকাজের বাইরে রাখা ১২ বিচারপতিও রয়েছেন।

সুপ্রিম কোর্ট সূত্রে জানা গেছে, গত ২০ অক্টোবর আপিল বিভাগে বিচারপতি অপসারণ নিয়ে সংবিধানের ষোড়শ সংশোধনী বাতিল সংক্রান্ত রায়ের পর সংবিধানের ৯৬ (৩) অনুচ্ছেদ অনুযায়ী সুপ্রিম জুডিশিয়াল কাউন্সিল গঠন করা হয়।

এই কাউন্সিল ইতোমধ্যে ২০১৯ সালের ২২ আগস্ট বিচারিক দায়িত্ব থেকে ‘সাময়িক অব্যাহতি’ পাওয়া হাইকোর্টের তিন বিচারপতির কাছে তাদের অভিযোগের বিষয়ে পৃথকভাবে বক্তব্য গ্রহণ করেছে।

এই তিনজন হলেন পদত্যাগ করা বিচারপতি সালমা মাসুদ চৌধুরী, বিচারপতি কাজী রেজা-উল হক ও বিচারপতি একেএম জহিরুল হক। সুপ্রিম জুডিশিয়াল কাউন্সিল গত ৭ নভেম্বর সর্বশেষ তাদের বিরুদ্ধে থাকা অভিযোগের বিষয়ে বক্তব্য গ্রহণ করেন।

যে সব অভিযোগ

দুর্নীতি ও গুরুতর অসদাচরণের অভিযোগ ওঠার পর ২০১৯ সালের ২২ আগস্ট হাইকোর্টের তিন বিচারপতিকে বিচারকাজ থেকে বিরত থাকার নির্দেশ দেওয়া হয়। তৎকালীন রাষ্ট্রপতির সঙ্গে পরামর্শক্রমে তৎকালীন প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেন এই সিদ্ধান্ত নেন।

এই সিদ্ধান্ত অবহিত করার পর ওই তিন বিচারপতি প্রধান বিচারপতির কাছে ছুটি চেয়ে আবেদন করেন। ছুটি শেষ হলেও গত ৫ বছর ধরে তারা বিচারকাজের বাইরে রয়েছেন।

জানা গেছে, বিচারপতি সালমা মাসুদ চৌধুরী ও বিচারপতি একেএম জহুরুল হক সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চের বিরুদ্ধে ২০১৯ সালের ১৬ মে নিয়মবহির্ভূতভাবে অধস্তন আদালতের মামলায় হস্তক্ষেপ করে ডিক্রি পালটে দেওয়ার অভিযোগ রয়েছে। বিচারপতি কাজী রেজা-উল হকের বিরুদ্ধেও রায় পাল্টে দেওয়াসহ বেশ কিছু অভিযোগ করা হয়েছে।

এ ছাড়া বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনকারীদের দাবির মুখে গত মাসে ১২ বিচারপতিকে বিচারকাজের দায়িত্ব থেকে বিরত রাখা হয়। তাদের বিরুদ্ধে দুর্নীতি-অনিয়ম, দলপ্রীতিসহ বিভিন্ন অভিযোগ উঠেছে। তবে অভিযোগগুলো এখনও সুনির্দিষ্টভাবে লিপিবদ্ধ হয়নি।

উচ্চ আদালতের বিচারপতি অপসারণ-সংক্রান্ত সংবিধানের ষোড়শ সংশোধনী মামলা আপিল বিভাগে বিচারাধীন থাকায় এই ১৫ বিচারপতির বিরুদ্ধে তদন্ত কার্যক্রম বন্ধ ছিল। গত ২০ অক্টোবর সংবিধানের ষোড়শ সংশোধনী বাতিল-সংক্রান্ত রায় আপিল বিভাগে বহাল রাখা হয়।

এরই ধারাবাহিকতায় ১৫ বিচারপতির বিরুদ্ধে তদন্ত সম্পন্ন করতে প্রধান বিচারপতি সংবিধান অনুযায়ী সুপ্রিম জুডিশিয়াল কাউন্সিল গঠন করেন।



Source link

Share this post

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *