শরীয়াহ ভিত্তিক সঞ্চয়পত্র ইস্যুর দাবিতে আইনি নোটিশ
বাংলাদেশের সংখ্যাগরিষ্ঠ মুসলিম জনগোষ্ঠীর জন্য ইসলামী শরীয়াহ ভিত্তিক সঞ্চয়পত্র ও বন্ড ইস্যুর দাবিতে আইনি নোটিশ পাঠানো হয়েছে।
আজ বৃহস্পতিবার (৭ নভেম্বর) রেজিস্ট্রি ডাকযোগে এ আইনি নোটিশ প্রেরণ করেন বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী মোঃ মাহমুদুল হাসান।
আইনি নোটিশে অর্থ মন্ত্রণালয়ের সচিব, ধর্ম মন্ত্রণালয়ের সচিব, বাংলাদেশের ব্যাংকের গভর্নর ও জাতীয় সঞ্চয় অধিদপ্তরের মহাপরিচালককে বিবাদী করা হয়েছে।
মূলত জাতীয় সঞ্চয় অধিদপ্তর বিরুদ্ধে বাংলাদেশের সংখ্যাগরিষ্ঠ মুসলিম জনগোষ্ঠীর প্রতি বৈষম্যের বিরুদ্ধে সংক্ষুব্ধ হয়ে এ আইনি নোটিশ পাঠানো হয়েছে।
নোটিশে বলা হয়েছে যে, সরকারের পক্ষে জাতীয় সঞ্চয় অধিদপ্তর বিভিন্ন সঞ্চয়পত্র ও বন্ড ইস্যু করে থাকে। দেশের সুনাগরিক হিসেবে দেশের আর্থিক স্থিতিশীলতা রক্ষার জন্য এবং মুদ্রাস্ফীতি নিয়ন্ত্রণের জন্য দেশের নাগরিকদের উচিত সরকারের ইস্যুকৃত বিভিন্ন সঞ্চয়পত্র ও বন্ডে বিনিয়োগ করা। কিন্তু জাতীয় সঞ্চয় অধিদপ্তরের অসাংবিধানিক কর্মকান্ড ও বৈষম্যের কারণে দেশের আপামর মুসলিম জনগোষ্ঠী এসব সঞ্চয়পত্র ও বন্ডে বিনিয়োগ করতে পারছে না।
আরও পড়ুন: দেশে ভারতীয় সিনেমা বাংলা ভাষায় ডাবিং করে প্রদর্শনের দাবিতে আইনি নোটিশ
আইনি নোটিশে বলা হয়েছে, বাংলাদেশের প্রধানত দুই ধরনের আর্থিক ব্যাবস্থা বিদ্যমান, যেমন: সুদ ভিত্তিক কনভেনশনাল আর্থিক ব্যাবস্থা এবং ইসলামীক শরীয়াহ ভিত্তিক আর্থিক ব্যবস্থা। বাংলাদেশ একটি মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ দেশ এবং বাংলাদেশের সংবিধানের অনুচ্ছেদ ৪১ অনুযায়ী বাংলাদেশের জনগণের ধর্ম চর্চা ও ধর্ম প্রচারের অধিকার রয়েছে।
ইসলাম ধর্ম অনুযায়ী, ইসলামীক শরীয়াহ ভিত্তিক অর্থ ব্যাবস্থা হলো ইসলাম ধর্ম চর্চার অন্যতম প্রধান অংশ। ফলশ্রুতিতে বাংলাদেশের অধিকাংশ সরকারি ও বেসরকারি ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানে ইসলামী শরীয়াহ ভিত্তিক ব্যাংকিং ও আর্থিক সেবা বিদ্যমান রয়েছে।
আইনি নোটিশ আরো বলা হয়েছে যে, বাংলাদেশের সরকারের পক্ষে জাতীয় সঞ্চয় অধিদপ্তর বিভিন্ন ধরনের সঞ্চয়পত্র ও বন্ড ইস্যু করে থাকে। এসব সঞ্চয়পত্র ও বন্ড থেকে বিনিয়োগকারীরা উল্লেখযোগ্য পরিমাণ সুদ পেয়ে থাকে।
অপরদিকে ইসলাম ধর্মের মূলনীতি অনুযায়ী, সুদ খাওয়া সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ। এক্ষেত্রে জাতীয় সঞ্চয় অধিদপ্তর বাংলাদেশের সংখ্যাগরিষ্ঠ মুসলিম জনগোষ্ঠীর জন্য কোন শরীয়াহ ভিত্তিক সঞ্চয়পত্র ও বন্ডের ব্যাবস্থা করেনি। এক্ষেত্রে জাতীয় সঞ্চয় অধিদপ্তর বাংলাদেশের সংখ্যাগরিষ্ঠ মুসলিম জনগোষ্ঠীর প্রতি বৈষম্য স্থাপন করেছে।
এমতাবস্থায় বাংলাদেশের জাতীয় সঞ্চয় অধিদপ্তর কে অবিলম্বে দেশের আপামর সংখ্যাগরিষ্ঠ মুসলিম জনগোষ্ঠীর জন্য ইসলামীক শরীয়াহ ভিত্তিক সঞ্চয়পত্র ও বন্ডের ব্যাবস্থা করতে হবে। যাতে দেশের সংখ্যাগরিষ্ঠ মুসলিম জনগোষ্ঠী তাদের অর্থ ইসলামী শরীয়াহ ভিত্তিক সঞ্চয়পত্র ও বন্ডে বিনিয়োগ করতে পারে এবং দেশের সুনাগরিক হিসেবে অবদান রাখতে পারে।
আইনি নোটিশ পাওয়ার ৭ দিনের মধ্যে দেশের সংখ্যাগরিষ্ঠ মুসলিম জনগোষ্ঠীর জন্য ইসলামীক শরীয়াহ ভিত্তিক সঞ্চয়পত্র ও বন্ড ইস্যু জন্য প্রয়োজনীয় ব্যাবস্থা নিতে জাতীয় সঞ্চয় অধিদপ্তর ও অন্যান্য বিবাদীদের কে অনুরোধ জানানো হয়েছে। অন্যথায় এ বিষয়ে ব্যবস্থা নিতে হাইকোর্টে রিট পিটিশন দায়ের করা হবে।
Leave a Reply