যাদের আয়কর রিটার্ন দাখিল বাধ্যতামূলক


দেশের সিটি করপোরেশন ও পৌরসভা এলাকায় অনুমোদন নিয়ে ভবন নির্মাণের নকশা দাখিলকালে আয়কর রিটার্ন দাখিল বাধ্যতামূলক করেছে সরকার। জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) করনীতি উইং থেকে এ-সংক্রান্ত আয়কর নির্দেশিকা ২০২৪-২৫ প্রকাশ করা হয়েছে।

গত ২৫ আগস্ট প্রকাশিত এ নির্দেশিকায় যেসব সেবা গ্রহণ-প্রদানের ক্ষেত্রে রিটার্ন দাখিল বাধ্যতামূলক তার তালিকা প্রকাশ করা হয়।

নির্দেশিকায় বলা হয়, রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (রাজউক), চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (সিডিএ), খুলনা উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (কেডিএ), রাজশাহী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (আরডিএ), গাজীপুর উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (গাউক), কক্সবাজার উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (কউক) বা সরকারের অনুরূপ কর্তৃপক্ষ অথবা সিটি করপোরেশন বা পৌরসভার অন্যান্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ থেকে অনুমোদন নিয়ে ভবন নির্মাণের নকশা দাখিলকালে রিটার্ন দাখিল বাধ্যতামূলক।

এনবিআর সূত্রে জানা যায়, সব আয়কর অফিসে রিটার্ন ফরম পাওয়া যায়। একজন করদাতা সারা বছর বিনামূল্যে আয়কর অফিস থেকে রিটার্ন ফরম সংগ্রহ করতে পারেন। জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের ওয়েবসাইট (nbr.gov.bd) থেকে রিটার্ন ফরম ডাউনলোড করা যাবে।

রিটার্নের ফটোকপিও গ্রহণযোগ্য। স্বাভাবিক ব্যক্তি করদাতাকে করদিবসের মধ্যে রিটার্ন দাখিল করতে হবে। করদিবসের মধ্যে রিটার্ন দাখিলের ক্ষেত্রে আয়কর আইনের ধারা ১৭৩ মোতাবেক কর পরিশোধ করতে হবে।

যাদের রিটার্ন দাখিল বাধ্যতামূলক তারা হলেন—

  • করদাতার মোট আয় করমুক্ত সীমা অতিক্রম করলে;
  • আয়বর্ষের পূর্ববর্তী তিন বছরের যেকোনো বছর করদাতার কর নির্ধারণ হয়ে থাকে বা তার আয় করযোগ্য হয়ে থাকে;
  • ফার্মের অংশীদার হলে;
  • কোম্পানির শেয়ারহোল্ডার পরিচালক বা শেয়ারহোল্ডার কর্মচারী হলে;
  • গণকর্মচারী হলে;
  • কোনো ব্যবসায় বা পেশায় যেকোনো নির্বাহী বা ব্যবস্থাপনা পদে বেতনভোগী কর্মী হলে;
  • কর অব্যাহতি প্রাপ্ত বা হ্রাসকৃত হারে করযোগ্য আয় থাকলে;
  • করারোপযোগ্য আয় না থাকা সাপেক্ষে ২০ লক্ষাধিক টাকার ঋণ গ্রহণে;
  • আমদানি নিবন্ধন সনদ বা রফতানি নিবন্ধন সনদ প্রাপ্তিতে ও বহাল রাখতে;
  • সিটি করপোরেশন বা পৌরসভা এলাকায় ট্রেড লাইসেন্স প্রাপ্তি ও নবায়নের জন্য;
  • সমবায় সমিতির নিবন্ধন প্রাপ্তিতে; সাধারণ বীমার তালিকাভুক্ত সার্ভেয়ার হতে এবং লাইসেন্স প্রাপ্তি ও নবায়ন করতে;
  • সিটি করপোরেশন, পৌরসভা ও ক্যান্টনমেন্ট বোর্ড এলাকায় ১০ লক্ষাধিক টাকার জমি, বিল্ডিং বা অ্যাপার্টমেন্ট বিক্রয় বা লিজ বা হস্তান্তর বা বায়নানামা বা আমমোক্তারনামা নিবন্ধন করতে;
  • ক্রেডিট কার্ড প্রাপ্তিতে ও বহাল রাখতে;
  • চিকিৎসক, দন্ত চিকিৎসক, আইনজীবী, চার্টার্ড অ্যাকাউন্ট্যান্ট, কস্ট অ্যান্ড ম্যানেজমেন্ট অ্যাকাউন্ট্যান্ট, প্রকৌশলী, স্থপতি অথবা সার্ভেয়ার হিসেবে বা সমজাতীয় পেশাজীবী হিসেবে কোনো স্বীকৃত পেশাজীবী সংস্থার সদস্যপদ প্রাপ্তিতে ও বহাল রাখতে;
  • মুসলিম ম্যারিজেস অ্যান্ড ডিভোর্সেস (রেজিস্ট্রেশন) অ্যাক্ট, ১৯৭৪ (অ্যাক্ট নম্বর এল টু অব ১৯৭৪) এর অধীন নিকাহ্ রেজিস্ট্রার, হিন্দু বিবাহ নিবন্ধন আইন, ২০১২ (২০১২ সনের ৪০ নম্বর আইন) এর অধীন হিন্দু বিবাহ নিবন্ধক ও স্পেশাল মেরিজ অ্যাক্ট, ১৮৭২ এর অধীন রেজিস্ট্রার হিসেবে লাইসেন্স প্রাপ্তি বা ক্ষেত্রমত নিয়োগপ্রাপ্তির ক্ষেত্রে বহাল রাখতে; ট্রেডবডি বা পেশাজীবী সংস্থার সদস্যপদ প্রাপ্তি ও বহাল রাখতে;
  • ড্রাগ লাইসেন্স, ফায়ার লাইসেন্স, পরিবেশ ছাড়পত্র, বিএসটিআই লাইসেন্স ও ছাড়পত্র প্রাপ্তি ও নবায়নে;
  • যেকোনো এলাকায় গ্যাসের বাণিজ্যিক ও শিল্প সংযোগ প্রাপ্তি ও বহাল রাখতে এবং সিটি করপোরেশন এলাকায় আবাসিক গ্যাস সংযোগ প্রাপ্তি এবং বহাল রাখতে;
  • লঞ্চ, স্টিমার, মাছ ধরার ট্রলার, কার্গো, কোস্টার ও ডাম্ব বার্জসহ যেকোনো প্রকারের ভাড়ায় চালিত নৌযানের সার্ভে সার্টিফিকের প্রাপ্তি ও বহাল রাখতে;
  • পরিবেশ অধিদপ্তর বা জেলা প্রশাসকের কার্যালয় থেকে ইট উৎপাদনের অনুমতি প্রাপ্তি ও নবায়নে;
  • সিটি করপোরেশন, জেলা সদর বা পৌরসভায় অবস্থিত ইংরেজি মাধ্যম স্কুলে শিশু বা পোষ্য ভর্তিতে;
  • সিটি করপোরেশন বা ক্যান্টনমেন্ট বোর্ড এলাকায় বিদ্যুৎ সংযোগ প্রাপ্তি বা বহাল রাখতে;
  • কোম্পানির এজেন্সি বা ডিস্ট্রিবিউটরশিপ প্রাপ্তি ও বহাল রাখতে;
  • আগ্নেয়াস্ত্রের লাইসেন্স প্রাপ্তি ও বহাল রাখতে;
  • আমদানির উদ্দেশ্যে ঋণপত্র খোলায়;
  • ৫ লক্ষাধিক টাকার পোস্ট অফিস সঞ্চয়ী হিসাব খোলায়;
  • ১০ লক্ষাধিক টাকার মেয়াদি আমানত খোলায় ও বহাল রাখতে;
  • ৫ লক্ষাধিক টাকার সঞ্চয়পত্র ক্রয়ের ক্ষেত্রে রিটার্ন দাখিল বার্ধতামূলক করা হয়েছে।



Source link

Share this post

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *