ভূমি অপরাধ প্রতিরোধ আইনের বিধিমালা জারি
ভূমি অপরাধ প্রতিরোধ ও প্রতিকার আইন-২০২৩ এর বিধিমালা-২০২৩ জারি করা হয়েছে। এ লক্ষ্যে সম্প্রতি প্রজ্ঞাপন জারি করেছে সরকার। এটি জারি হওযায় এখন থেকে কোন ব্যক্তির জমি অন্যায়ভাবে বেদখল করা হলে, জমির দলিল নিয়ে জালিয়াতি করা হলে এই আইনে বিধিমালা অনুযায়ী সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
ভূমি মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, আইনটি বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে বিধিমামলা অপরিহার্য। প্রজ্ঞাপন জারির পর থেকে অপরাধীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওযার ক্ষেত্রে কোন বাধা রইলো না।
মন্ত্রণালয় থেকে বলা হয়, সারাদেশে ভূমি নিয়ে প্রতারণা, জালিয়াতি, বেদখল বন্ধে প্রশাসনিক ব্যবস্থা গ্রহণে ভূমি অপরাধ প্রতিরোধ ও প্রতিকার আইনের ধারা ৬ এর উপ-ধারা (১) এর বিধান অনুযায়ী আপাতত বলবৎ কোনো আইনের অধীন দায়েরকৃত মামলায় কোনো দলিল প্রতারণা বা জালিয়াতির মাধ্যমে তৈরি প্রমাণিত হলে আদালত ওই মামলার আদেশের কপি সংশ্লিষ্ট জেলা প্রশাসক ও জেলা রেজিস্ট্রার বরাবর পাঠাবে।
সূত্র জানায়, প্রতারণা বা জালিয়াতির অভিযোগ বিচারের জন্য পাঠাতে আইনের ধারা ৬ এর উপ-ধারা এর উদ্দেশ্য পূরণে ভূমি হস্তান্তর, জরিপ, রেজিস্ট্রেশন, রেকর্ড হালনাগাদ বা ব্যবস্থাপনা সংক্রান্ত কোনো কার্যক্রমে প্রদর্শিত বা উপস্থাপিত কোনো দলিল বা তথ্যের বিষয়ে প্রতারণা বা জালিয়াতি করা হয়েছে এমন বিশ্বাস কবার যুক্তিসঙ্গত কারণ থাকলে, সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিকে জবাব দেওয়ার জন্য নোটিশ দেবেন।
অবৈধ দখল প্রতিরোধের ব্যবস্থা গ্রহণে আইনের ধারা ৭ এর উদ্দেশ্য পূরণে আইনানুগভাবে দখলদার কোনো ব্যক্তিকে উপযুক্ত আদালত বা কর্তৃপক্ষের আদেশ ছাড়া তার দখল করা ভূমি হতে উচ্ছেদ বা দখলচ্যুত করবার চেষ্টা করা হলে বা হুমকি দেওয়া হলে অথবা তাকে ওই ভূমির দখল বা প্রবেশে বাধা দিলে তিনি দায়িত্বপ্রাপ্ত এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেটের কাছে তা প্রতিরোধের ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য প্রয়োজনীয় দলিলসহ আবেদন করতে পারবেন।
আরও পড়ুন: ভূমি অপরাধ প্রতিরোধ ও প্রতিকার আইন: বিচারাঙ্গনে যা ঘটতে যাচ্ছে
অবৈধভাবে দখলচ্যুত ব্যক্তির দখল পুনরুদ্ধারের আবেদন পদ্ধতি ও নিষ্পত্তির লক্ষ্যে আইনের ধারা ৮ এর উদ্দেশ্য পূরণে, কোনো ব্যক্তিকে উপযুক্ত আদালত বা কর্তৃপক্ষের আদেশ ছাড়া তার দখল করা ভূমি হতে উচ্ছেদ বা দখলচ্যুত করা হলে তিনি তাতে উল্লিখিত দলিলসহ তার পূর্ব-দখলীয় ভূমিতে দখল পুনর্বহাল করার জন্য দায়িত্বপ্রাপ্ত এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট বরাবর আবেদন করতে পারবেন।
দখল পুনরুদ্ধারে আইনের ধারা ৮ এর উদ্দেশ্যপূরণে নালিশি ভূমির দখল হস্তান্তরে প্রতিপক্ষ বরাবর প্রদত্ত আদেশ প্রাপ্তির ১৫ (পনের) দিনের মধ্যে প্রতিপক্ষ দখল হস্তান্তরে ব্যর্থ হলে এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট আবেদনকারীকে দখলে পুনর্বহাল করতে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সহায়তার আদেশ দিতে পারবেন। সরকারি, আধা-সরকারি, স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠান বা জনসাধারণের ব্যবহার্য ভূমির ক্ষতিসাধন বা শ্রেণি পরিবর্তন এবং অবৈধভাবে মাটির উপরিস্তর কর্তনের ক্ষেত্রে ব্যবস্থা গ্রহণে আইনের ধারা ১১, ১২ ও ১৩ এর উদ্দেশ্য পূরণে যদি কোনো ব্যক্তি কোনো কার্য করেন, তাহলে কেন তার বিরুদ্ধে আইনের ধারা ১৪ এর অধীনে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে না, সেজন্য জেলা প্রশাসক বা ক্ষমতাপ্রাপ্ত কর্মকর্তা কারণ দর্শানোর নোটিশ দেবেন।
বিধিমালার অধীন কোনো নোটিশ বা আদেশ সংশ্লিষ্ট ব্যক্তির সর্বশেষ বসবাসের ঠিকানায় রেজিস্টার্ড ডাকযোগে, জিইপি বা অনুমোদিত কোনো কুরিয়ার সার্ভিসের মাধ্যমে পাঠানো যাবে। নকল সরবরাহ প্রচলিত বিধি-বিধান অনুসরণ করে এ আইনের অধীন প্রদত্ত আদেশ, নথি ও দলিলাদির সার্টিফাইড কপি এবং সত্যায়িত ফটোকপি নকল হিসেবে সরবরাহ করা যাবে। বাস্তবায়ন প্রতিবেদন পাঠানো ও পর্যালোচনা আইন বাস্তবায়ন পরিবীক্ষণের জন্য বিভাগীয় কমিশনার প্রতি মাসের ১০ তারিখের মধ্যে মাসিক প্রতিবেদন মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ ও ভূমি মন্ত্রণালয়ে পাঠাবেন। বিভাগীয় কমিশনারদের কাছ থেকে প্রাপ্ত প্রতিবেদন পর্যালোচনা শেষে সরকারের কাছে প্রয়োজনে সুপারিশ দাখিলের জন্য ভূমি মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিবের নেতৃত্বে ৭ সদস্যের কমিটি থাকবে।
Leave a Reply