নোয়াখালী বিভাগ করার বিষয়ে আইনজীবীকে যা জানাল মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ


নোয়াখালীকে বিভাগ করার উদ্যোগ নিতে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগে আবেদন করেছিলেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী মো. মনির উদ্দিন। পরে তিনি রিটও করেছিলেন। তার পরিপ্রেক্ষিতে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ থেকে তাকে চিঠি পাঠানো হয়েছে।

আজ মঙ্গলবার (১১ মার্চ) আইনজীবী মো. মনির উদ্দিন চিঠি পাওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সিনিয়র সহকারী সচিব মুহাম্মদ সাদিকুর রহমান স্বাক্ষরিত চিঠিতে বলা হয়, নতুন বিভাগ গঠনের ক্ষেত্রে মন্ত্রিসভা বৈঠকের সিদ্ধান্ত প্রয়োজন। মন্ত্রিসভা-বৈঠকের সিদ্ধান্ত ছাড়া কোনো বিভাগ গঠন করা সম্ভব নয়।

এমতাবস্থায়, নোয়াখালী বিভাগ গঠনের প্রস্তাবটি নির্দেশক্রমে ফেরত দেওয়া হলো। এ বিষয়ে সদয় অবগতি ও প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য চিঠির অনুলিপি মন্ত্রিপরিষদ সচিবের একান্ত সচিবসহ সংশ্লিষ্টদের পাঠানো হয়েছে।

এর আগে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগে পাঠানো আবেদনে আইনজীবী মো. মনির উদ্দিন বলেন, নোয়াখালী জেলা বাংলাদেশের একটি ঐতিহ্যবাহী প্রাচীন জেলা। নোয়াখালী জেলা ১৮২১ সালে প্রতিষ্ঠিত হয় এটি পূর্বে ভুলয়া নামে পরিচিত ছিল এবং ১৮৬৮ সালে আনুষ্ঠানিকভাবে নোয়াখালী নামকরণ করা হয়।

আরও পড়ুনদুর্নীতিবাজ বিচারক খুঁজছে বিশেষ কমিটি, ৩ জনকে শোকজ

ভাষা, সংস্কৃতি ও কৃষ্টি কালচারের জন্য একটি নোয়াখালী জেলার স্বতন্ত্র বৈশিষ্ট্য বিদ্যমান। বৃহত্তর নোয়াখালী অঞ্চলের জনসংখ্যা প্রায় এক কোটির কাছাকাছি নোয়াখালী জেলার মোট আয়তন প্রায় ৩৮৮৫.৮৭ বর্গ কিলোমিটার। বর্তমানে নোয়াখালী জেলার আয়তন ক্রমান্বয়ে বাড়ছে।

ডুবোচরগুলো চরে পরিণত হয়ে এটি আরেক বাংলাদেশের সমান আয়তন হবে বলে বিশেষজ্ঞদের অভিমত। মোট নয়টি থানা নিয়ে নোয়াখালী জেলা গঠিত। নোয়াখালী বিভাগ নোয়াখালী ভাষায় কথা বলা লোকজনের প্রাণের দাবি। নোয়াখালী, চাঁদপুর, লক্ষ্মীপুর, ফেনীসহ নোয়াখালী বিভাগ বাস্তবায়ন এখন সময়ের দাবি।

উল্লেখ্য, ২০২২ সালের খানা তথ্য অনুযায়ী নোয়াখালীতে সবচেয়ে কম দরিদ্র লোক বসবাস করে অর্থাৎ নোয়াখালী জেলা এখন বাংলাদেশের সবচেয়ে ধনী জেলা, নোয়াখালী বিভাগের পাশাপাশি কুমিল্লা বিভাগ হলে কোনো সমস্যা নাই।

কিন্তু নোয়াখালী জেলাকে বাদ দিয়ে কুমিল্লা বিভাগ বাস্তবায়ন হলে তা নোয়াখালীর ভাষায় কথা বলা অর্থাৎ নোয়াখালী, লক্ষ্মীপুর, চাঁদপুর, ফেনী জেলার মানুষের শত বছরের কৃষ্টি, কালচার, মুখের ভাষার ওপর ব্যাপকভাবে প্রভাব ফেলবে।

প্রত্যেকটি প্রধান ভাষার উপভাষা থাকে। যদি নোয়াখালীর আঞ্চলিক ভাষার উপর প্রভাব পড়ে তা মূলত বাংলা ভাষার ওপর প্রভাব পড়বে। ১৯৫২ সালে পাকিস্তানি শাসকগোষ্ঠী ভাষাকে অবমূল্যায়ন করায় তা ক্রমে রাষ্ট্রীয় এবং জাতির মুক্তির আন্দোলনে পরিণত হয়।

যা পরে বাংলাদেশ নামক রাষ্ট্রের জন্ম হয়। এখন যদি নোয়াখালী ভাষার লোকদের প্রাণের দাবি নোয়াখালী বিভাগ বাস্তবায়ন না হয় তা হলে ইতিহাস তাদের ক্ষমা করবে না।



Source link

Share this post

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *