দ্রুত পৃথক বিচার বিভাগীয় সচিবালয় প্রতিষ্ঠার দাবি বিচারকদের


পৃথক বিচার বিভাগীয় সচিবালয় প্রতিষ্ঠার দাবি জানিয়েছে জুডিসিয়াল সার্ভিসের (বিজেএস) ষষ্ঠ থেকে পঞ্চদশ ব্যাচের সহকারী জজ ও সিনিয়র সহকারী জজ সমমর্যাদার বিচারকদের সংগঠন ইয়াং জাজেস ফর জুডিসিয়াল রিফর্ম।

আজ রোববার (২০ এপ্রিল) গণমাধ্যমে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে সংগঠনটি দ্রুত স্বাধীন বিচার বিভাগ প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে সরকারের প্রতি এ দাবি জানায়।

সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে সংগঠনটি জানায়, অন্তর্বর্তীকালীন সরকার অবিলম্বে এই বিষয়ে প্রয়োজনীয় নীতিগত ও প্রাতিষ্ঠানিক পদক্ষেপ গ্রহণ করবে। বাংলাদেশের সংবিধানের মূল লক্ষ্য আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা ও মৌলিক অধিকার সংরক্ষণ সুনিশ্চিত করতে একটি স্বাধীন বিচার বিভাগ অপরিহার্য।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, মাসদার হোসেন মামলায় সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশনার আলোকে বিচার বিভাগকে কার্যকরভাবে নির্বাহী বিভাগের নিয়ন্ত্রণমুক্ত করতে পৃথক বিচার বিভাগীয় সচিবালয় প্রতিষ্ঠা অত্যন্ত জরুরি।

স্বাধীন বিচার বিভাগ নিশ্চিতকরণে ইয়াং জাজেস ফর জুডিসিয়াল রিফর্ম কর্তৃক ঘোষিত ১২ দফা সংস্কার প্রস্তাবের ১ম দফা এবং বিচার বিভাগ সংস্কার কমিশন কর্তৃক প্রস্তাবিত এবং বাংলাদেশের প্রধান বিচারপতি ঘোষিত রোডম্যাপের আলোকে দ্রুত সময়ের মধ্যে পৃথক সচিবালয় প্রতিষ্ঠার জোর দাবি জানাচ্ছে।

অন্তর্বর্তী সরকারের নেয়া রাষ্ট্র সংস্কারকে স্থায়ী ও অর্থবহ করে তুলতে স্বাধীন বিচার বিভাগ প্রতিষ্ঠার অপরিহার্যতা উল্লেখ করে প্রধান বিচারপতি ড. সৈয়দ রেফাত আহমেদ সম্প্রতি তার এক বক্তব্যে উল্লেখ করেছেন যে, ‘কোনো সেক্টরেই সংস্কার কার্যক্রম স্থায়িত্ব পাবে না, যদি বিচার বিভাগের সংস্কার না ঘটে।

আরও পড়ুনবিচার বিভাগ স্বাধীন না হলে ভবিষ্যতেও ‘হীন স্বার্থে’ ব্যবহারের পুনরাবৃত্তি ঘটতে পারে

ইয়াং জাজেস ফর জুডিসিয়াল রিফর্ম এই বক্তব্যের সঙ্গে দৃঢ়ভাবে একমত পোষণ করছে। এই কথা অস্বীকার করার উপায় নেই যে, বিচার বিভাগের সংস্কারই দেশের সামগ্রিক আইনি ও সামাজিক উন্নয়নের মূল চালিকাশক্তি।

বিজ্ঞপ্তিতে আরো বলা হয়, বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকার দেশের বিদ্যমান বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানগুলো সংস্কার উদ্যোগকে আমরা স্বাগত জানাই। পৃথক বিচার বিভাগীয় সচিবালয় প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে সাধারণ মানুষ সবচেয়ে বেশি উপকৃত হবেন। মামলাজট নিরসনে বিচার বিভাগ স্বাধীনভাবে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে পারবে।

বিচার প্রক্রিয়ায় দীর্ঘসূত্রিতা হ্রাস পাবে, ফলে জনসাধারণের বিচারপ্রাপ্তির অধিকার দ্রুত ও ত্বরান্বিত হবে। সর্বোপরি, একটি স্বাধীন বিচার ব্যবস্থা প্রতিটি নাগরিকের অধিকার সুরক্ষা ও সামাজিক ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে।

বিচার বিভাগের স্বাধীনতা শুধু আইনি কাঠামো কিংবা পাঠ্যপুস্তকে নয়, বরং এর বাস্তবে প্রয়োগ নিশ্চিত করতে হবে। দেশের বিচার ব্যবস্থার প্রতি জনগণের আস্থাকে সমুন্নত রাখতে সক্ষম হয় কেবলমাত্র একটি স্বাধীন ও নিরপেক্ষ বিচার বিভাগ।

এর জন্য পৃথক বিচার বিভাগীয় সচিবালয় অত্যন্ত জরুরি, যা বিচার বিভাগকে প্রশাসনিক, আর্থিক ও কার্যগত স্বাধীনতা প্রদান করবে। জেলা আদালতের বার্ষিক বাজেট প্রণয়ন ও বরাদ্দ এখনো নির্বাহী বিভাগের মাধ্যমে হয়ে থাকে যা স্বাধীন বিচার বিভাগ প্রতিষ্ঠায় অন্যতম প্রধান অন্তরায়।



Source link

Share this post

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *