দ্বিতীয় বিয়ে করতে যাওয়ার পথে হামলার শিকার বর
প্রথম স্ত্রীর সঙ্গে ছাড়াছাড়ি হওয়ার পর তিন মাস পেরিয়ে গেলেও দেনমোহরের টাকা পরিশোধ করেননি শফিকুল ইসলাম (৩০)। এর মধ্যেই বরযাত্রী নিয়ে দ্বিতীয় বিয়ে করতে যাচ্ছিলেন তিনি।
পথে বরযাত্রীর গাড়ি থামিয়ে হামলা করেছেন প্রথম পক্ষের স্ত্রীর স্বজনেরা। এতে বরসহ অন্তত তিনজন আহত হয়েছেন। গতকাল শুক্রবার সন্ধ্যায় গাইবান্ধার সাদুল্যাপুর উপজেলার রসুলপুর ইউনিয়নের ফকিরপাড়া গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।
খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে বর শফিকুল ইসলামসহ আহত ব্যক্তিদের উদ্ধার করে পুলিশ। এ ঘটনায় রাতে দুই পক্ষকে থানায় এনে ঘটনা মীমাংসা করে দেওয়া হয় বলে পুলিশ জানিয়েছে।
শফিকুলের বাড়ি সাদুল্যাপুর উপজেলার রসুলপুর ইউনিয়নের মধ্যপাড়া গ্রামে। তিনি ওই গ্রামের জাহিদুল ইসলামের ছেলে। তাঁর প্রথম স্ত্রী পারভীন খাতুন একই ইউনিয়নের ফকিরপাড়া গ্রামের জাহাঙ্গীর আলমের মেয়ে। ওই গ্রাম দিয়ে দ্বিতীয় বিয়ে করতে যাওয়ার পথে গাড়ি থামিয়ে হামলা করা হয় বলে অভিযোগ।
আরও পড়ুন: নিজ সিদ্ধান্তে তত্ত্বাবধায়ক ব্যবস্থা বাতিল করেন হাসিনা
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, ২০২২ সালের জানুয়ারি মাসে শফিকুলের সঙ্গে চার লাখ টাকা দেনমোহরে ফকিরপাড়া গ্রামের পারভীন খাতুনের বিয়ে হয়। পারিবারিক দ্বন্দ্বের জেরে তিন মাস আগে তাঁদের ছাড়াছাড়ি হয়ে যায়। ছাড়াছাড়ির তিন মাস পরও শফিকুল দেনমোহরের টাকা পরিশোধ করেননি।
গতকাল সন্ধ্যায় দ্বিতীয় বিয়ের জন্য মাইক্রোবাসে করে একই উপজেলার জামালপুর ইউনিয়নের পাতিল্যাকুড়া (উত্তরপাড়া) গ্রামে কনের বাড়িতে যাচ্ছিলেন শফিকুল। বরযাত্রীবাহী মাইক্রোবাসটি ফকিরপাড়া গ্রামে পৌঁছালে পারভীনের স্বজনেরা পথরোধ করেন।
শফিকুল ইসলামের অভিযোগ, পারভীন ও তাঁর স্বজনেরা তাঁদের মাইক্রোবাস থামানোর পর গাড়ি থেকে নামিয়ে লাঠি দিয়ে মারধর করেন। এতে তিনিসহ তিনজন আহত হয়েছেন। তিনি স্বীকার করেন, দেনমোহরের টাকা পরিশোধ করা হয়নি। পরে দেওয়ার কথা ছিল। এর মধ্যেই এই হামলা করা হয়।
তবে পারভীন খাতুন মারধরের বিষয়টি অস্বীকার করেন। তিনি বলেন, শফিকুলের সঙ্গে প্রায় আড়াই বছর তিনি ঘর-সংসার করেন। এরপর তাঁদের ছাড়াছাড়ি হয়ে যায়। বিবাহবিচ্ছেদের প্রায় তিন মাস পেরিয়ে যাচ্ছে। কিন্তু দেনমোহরের টাকা বুঝিয়ে দেওয়া হয়নি।
দেনমোহরের টাকা শোধ না করেই তিনি দ্বিতীয় বিয়ে করতে যাচ্ছিলেন। তাই পথরোধ করে দেনমোহরের টাকা দাবি করা হয়। এ সময় কথা–কাটাকাটি হলেও কোনো মারধর করা হয়নি বলে তিনি দাবি করেন।
সাদুল্যাপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) তাজ উদ্দিন খন্দকার বলেন, ঘটনাটি পুলিশ জানার পর শফিকুলকে থানায় আনা হয়। পরে গতকাল রাতে উভয় পক্ষ ঘটনা মীমাংসা করে। রাতেই শফিকুলকে ছেড়ে দেওয়া হয়। শফিকুল পরে দ্বিতীয় বিয়ে করেছেন কি না জানা যায়নি।
Leave a Reply