চাঁদাবাজির মিথ্যা মামলায় দণ্ডিত আসামি ১৯ বছর খালাস


১৯ বছর আগে রাজধানীর পল্লবীর রূপনগরে দুই হাজার টাকা চাঁদা দাবির অভিযোগে সুজনকে খালাস দিয়েছেন হাইকোর্ট। এর আগে তাকে দুই বছরের জন্য দণ্ডিত করা হয়েছিল।

বিচারপতি মো. আশরাফুল কামালের একক হাইকোর্ট বেঞ্চ ২০২৩ সালের ৯ মার্চ রায়টি ঘোষণা করেন। সম্প্রতি এই রায়টি প্রকাশ করা হয়েছে।

আদালতে রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল অ্যাডভোকেট মো. আশেক মোমিন, সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল অ্যাডভোকেট লাকী বেগম ও ফেরদৌসী আক্তার।

আসামিপক্ষে কোনো আইনজীবী ছিলেন না।

নথি থেকে জানা যায়, ২০০৫ সালের ৩০ মে রূপনগর আবাসিকে একটি চা দোকানে সুজন নামে এক ব্যক্তি দুই হাজার টাকা চাঁদা দাবি করেন। অপর আসামি সায়েম তাকে এই চাঁদার জন্য পাঠিয়েছিলেন। টাকা না দিলে দোকান ভাঙচুর করার হুমকি দিয়ে চলে যান তিনি।

পরে ১ জুন ফের চাঁদা দাবি করেন। এ সময় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর একটি টহল দল গন্ডগোল শুনে বাদীর দোকানে যায়। ঘটনা শুনে আসামি সুজনকে আটক করা হয়।

এরপর দোকানদার পল্লবী থানায় এজাহার করেন। তবে আসামিপক্ষের দাবি, বাদী ও আসামি পূর্ব পরিচিত। দোকান পরিচালনার জন্য সুজনের কাছ থেকে বাদী দুই হাজার টাকা ধার নিয়েছিলেন। সেই টাকা ফেরত চাইতে গেলে তর্ক-বিতর্ক হয় এবং মিথ্যা মামলা করেন ওই দোকানি।

আরও পড়ুন: শিবচরে হবে দেশের প্রথম আইন বিশ্ববিদ্যালয়, জমি পরিদর্শনে আইনমন্ত্রী

এ মামলায় দুই আসামির বিরুদ্ধে ২০০৫ সালের ১২ জুন অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করা হয়।

মামলার বিচার শেষে মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট (দ্রুত বিচার আদালত-৪) ২০০৫ সালের ২৮ আগস্ট অভিযুক্তকে কারাদণ্ড দেন। রায়ে সায়েমকে খালাস দিয়ে সুজনকে দুই বছরের কারাদণ্ড এবং দুই হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে এক মাসের কারাদণ্ড দেওয়া হয়।

এ রায়ের বিরুদ্ধে ২০০৫ সালে আপিলের পর ঢাকা মহানগর দায়রা জজ আদালত ২০০৬ সালের ২৮ ফেব্রুয়ারি আপিল নামঞ্জুর করেন।

এরপর হাইকোর্টে রিভিশন দায়ের করেন। শুনানি শেষে ২০২৩ সালের ৯ মার্চ রায় দেন হাইকোর্ট।

রায়ে হাইকোর্ট বিচারিক আদালত ও আপিল আদালতের রায় বাতিল করে করেন এবং সুজনকে অভিযোগ থেকে অব্যাহতি দিয়ে খালাস দেন।

রায়ে উচ্চ আদালত বলেন, ২ নম্বর সাক্ষী বলেছেন তিনি এ ঘটনা দেখেননি। তারও দোকান আছে এবং তার দোকানে অভিযুক্ত ব্যক্তি কোনো চাঁদা দাবি করেননি। যে চাঁদাবাজ সে তো সব দোকান থেকে চাঁদা দাবি করবে। কিন্তু এ ক্ষেত্রে অভিযুক্ত শুধু বাদীর দোকান থেকে চাঁদা চাওয়া অন্য কিছু প্রমাণ করে। ৩ নম্বর সাক্ষী বৈরী ঘোষণা করা হয়েছে। ৪, ৫, ৬ ও ৭ নম্বর ঘটনাস্থলে অভিযুক্তকে দেখেছেন মর্মে উল্লেখ করেননি।

সার্বিক পর্যালোচনায় প্রতীয়মান হয় যে, প্রসিকিউশন অভিযোগ প্রমাণে সম্পূর্ণরূপে ব্যর্থ হয়েছেন। বাদী অভিযুক্তকে হয়রানি করার হীনমানষে অত্র মিথ্যা মামলাটি করেছেন। তাই দিনাজপুর নিবাসী সুজনকে অভিযোগ থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়।



Source link

Share this post

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *