গাজীপুর আইনজীবী সমিতির সাবেক সভাপতি ও কোষাধ্যক্ষ কারাগারে
প্রায় ২ কোটি টাকা আত্মসাতের মামলায় গাজীপুর জেলা আইনজীবী সমিতির সাবেক সভাপতি মো. আহছান উদ্দিন প্রধান ও কোষাধ্যক্ষ মোহাম্মদ মিজানুর রহমানকে কারাগারে পাঠিয়েছেন আদালত।
হাইকোর্টের ছয় সপ্তাহের অন্তর্বর্তীকালীন জামিন শেষে বুধবার (২৪ জুলাই) তারা গাজীপুরের চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে আত্মসমর্পণ করলে আদালতের বিচারক মো. কায়সারুল ইসলাম তাদের জেলহাজতে পাঠানোর আদেশ দেন। এরপরেই তাদের নেয়া হয়েছে কারাগারে।
এর আগে গত ১৫ মে আইনজীবী সমিতির পক্ষে আহছান উদ্দিন প্রধান, সাধারণ সম্পাদক মিজানুর রহমান ও সমিতির কোষাধ্যক্ষ মোহাম্মদ মিজানুর রহমানসহ পাঁচ জনের বিরুদ্ধে সমিতির পক্ষে চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে মামলাটি করেন সমিতির স্টাফ সোহাগ রানা খান।
অভিযুক্ত সভাপতি আহছান উদ্দিন প্রধান ও সাধারণ সম্পাদক মিজানুর রহমান আওয়ামী আইনজীবী প্যানেল থেকে নির্বাচিত হয়েছিলেন ২০২৩-২০২৪ সালের নির্বাচনে।
আইনজীবীদের অভিযোগ, নির্বাচিত হয়ে ক্ষমতার অপব্যবহার করে সমিতির চারটি অ্যাকাউন্ট থেকে টাকা তুলে ব্যক্তিগতভাবে খরচ করেছেন অভিযুক্তরা। এসব কর্মকাণ্ডের সঠিক হিসাব দিতে না পারায় পরপর কয়েকবার মিটিংয়ে তোপের মুখে পড়েন তারা।
পরবর্তীতে বারের সংকট নিরসনে সাধারণ সদস্যের মতামতের ভিত্তিতে সমিতির সাধারণ সভা অনুষ্ঠিত হয়। ওই সাধারণ সভায় সমিতির সাবেক সভাপতি, সাধারণ সম্পাদকদের সমন্বয়ে ৭ সদস্যবিশিষ্ট একটি আহ্বায়ক কমিটি গঠন করা হয়।
ওই কমিটির আহ্বায়ক হন আইনজীবী সমিতির সাবেক সভাপতি ও সদর মেট্রো থানা আওয়ামী লীগের সভাপতি এডভোকেট মো. ওয়াজ উদ্দিন মিয়া এবং সদস্য সচিব করা হয় সমিতির সাবেক সভাপতি ও গাজীপুর পৌর বিএনপি’র সাবেক আহ্বায়ক সুলতান উদ্দিনকে।
আরও পড়ুন: গাজীপুর বারের সাবেক সভাপতি-সম্পাদক-কোষাধ্যক্ষের বিরুদ্ধে মামলা
কমিটির অন্যান্য সদস্যরা সকলেই বারের সাবেক সভাপতি-সম্পাদক। এই কমিটির সদস্যরা আহছান উদ্দিন প্রধান ও মিজানুর রহমানদের কমিটির সময়ের দুর্নীতি অনুসন্ধান শুরু করেন। এমন পরিস্থিতিতে আইনজীবী সমিতির আত্মসাৎ হওয়া অর্থ উদ্ধারে ও দুর্নীতির অভিযোগে বারবার প্রতিবাদ সভা ও বিক্ষোভ করে আইনজীবী সদস্যরা।
এ বিষয়ে সাধারণ সভায় গঠিত কমিটির আহ্বায়ক এডভোকেট ওয়াজ উদ্দিন মিয়া বলেন, সাবেক কমিটির সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকসহ কয়েকজনের বিরুদ্ধে সমিতির ফান্ড থেকে ১ কোটি ৯৪ লাখ টাকা আত্মসাতের সত্যতা পাওয়া গেছে। পরে সমিতির সিদ্ধান্ত অনুযায়ী সাবেক সভাপতি, সাধারণ সম্পাদক, কোষাধ্যক্ষ এবং তাদের সহযোগী হিসেবে লাইব্রেরি ও মহিলা বিষয়ক সম্পাদকের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়।
ওই কমিটির সদস্য সচিব সুলতান উদ্দিন বলেন, তাদের কাছ থেকে সকল নথিপত্র উদ্ধার করা হয়েছে। অভিযুক্তরা অভিযোগের জবাবেও আত্মসাতের বেশ কিছু বিষয় স্বীকারও করেছেন। অভিযুক্ত সাধারণ সম্পাদক টাকা ফিরিয়ে দিতে একটি চেক দিয়েছিলেন, সেটিও ডিজঅনার হয়েছে।
এদিকে বারের টাকা আত্মসাতের বিষয়ে জানতে বারবার অভিযুক্ত সভাপতি-সাধারণ সম্পাদকের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করেও তাদের পাওয়া যায়নি। ১৯৭৮ সালে গঠিত গাজীপুর জেলা আইনজীবী সমিতিতে বর্তমানে ২ হাজার ৩শ’র ওপরে সদস্য রয়েছে।
Leave a Reply