কোন কোন আদালতে লোহার খাঁচা রয়েছে, জানতে চান হাইকোর্ট


দেশের কোন কোন আদালতের ভেতরে (অধস্তন আদালতের এজলাস কক্ষ) এখনো লোহার খাঁচা রয়েছে, কোন কোন আদালত থেকে খাঁচা সরানো হয়েছে, তা জানতে চেয়েছেন হাইকোর্ট। এ বিষয়ে চার সপ্তাহের মধ্যে আইনসচিবকে আদালতে অগ্রগতি (কমপ্লায়েন্স) প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে।

আজ সোমবার (১৩ জানুয়ারি) বিচারপতি ফারাহ মাহবুব ও বিচারপতি দেবাশীষ রায় চৌধুরীর সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দেন।

অধস্তন আদালতের এজলাস কক্ষ থেকে লোহার খাঁচা অপসারণের নির্দেশনা চেয়ে ১০ আইনজীবী গত বছরের ২৩ জানুয়ারি রিট করেন। রিটের প্রাথমিক শুনানি নিয়ে একই বছরের ২৪ ফেব্রুয়ারি হাইকোর্ট রুলসহ আদেশ দেন।

দেশের কোন কোন আদালতের ভেতরে (অধস্তন আদালতের এজলাস কক্ষ) লোহার খাঁচা রয়েছে, এ বিষয়ে ৬০ দিনের মধ্যে আইনসচিবকে আদালতে প্রতিবেদন দিতে বলা হয়। এর ধারাবাহিকতায় আজ বিষয়টি আদালতে ওঠে।

আদালতে রিটের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী মোহাম্মদ শিশির মনির। রাষ্ট্রপক্ষে শুনানি করেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল তানিম খান।

আরও পড়ুনসুপ্রিম কোর্টের মতামত নিয়ে অন্তর্বর্তী সরকারের শপথ বৈধ, রিট খারিজ

পরে আইনজীবী শিশির মনির বলেন, দেশের অধস্তন আদালতে কোথায় কোথায় এখনো লোহার খাঁচা রয়েছে, কোন কোন আদালত থেকে খাঁচা সরানো হয়েছে, সে বিষয়ে চার সপ্তাহের মধ্যে কমপ্লায়েন্স (প্রতিবেদন) দিতে বলা হয়েছে। পরবর্তী শুনানির জন্য ১০ ফেব্রুয়ারি দিন রাখা হয়েছে। কোনো সভ্য সমাজে লোহার খাঁচার পদ্ধতি নেই, যা মানবাধিকারের লঙ্ঘন বলে উল্লেখ করেছেন আদালত।

ঢাকার আদালত থেকে ইতিমধ্যে লোহার খাঁচা সরানো হয়েছে বলে শুনানিতে উল্লেখ করেছেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল তানিম খান। তিনি বলেন, চার সপ্তাহের জন্য শুনানি মুলতবি করেছেন আদালত। এর মধ্যে যদি সব খাঁচা সরানো হয়ে যায়, তাহলে কমপ্লায়েন্স দিতে হবে নতুবা আপডেট (হালনাগাদ) জানাতে হবে।

গত বছর যখন রিটটি করা হয়, তখন রিট আবেদনকারীদের পক্ষ থেকে বলা হয়, দেশের অধস্তন আদালত ও ট্রাইব্যুনালে এ ধরনের লোহার খাঁচা অতীতে ছিল না। ৮৪টি আদালতে এ ধরনের খাঁচা বিদ্যমান, যার মধ্যে ৭৪টি ঢাকায় অবস্থিত।

এ ধরনের খাঁচা ব্যবস্থাপনা সংবিধানের ৩১, ৩২ ও ৩৫ (৫) অনুচ্ছেদের সঙ্গে সাংঘর্ষিক। ৩৫ (৫)-এ বলা আছে, কারও সঙ্গে নিষ্ঠুর অমানবিক আচরণ করা যাবে না; অথচ এই খাঁচাব্যবস্থার মাধ্যমে নাগরিকদের সঙ্গে নিষ্ঠুর অমানবিক ও বর্বর আচরণ করা হচ্ছে, মূলত এসব যুক্তিতে রিটটি করা হয়।

আর সংবিধানের ৩১, ৩২ ও ৩৫ (৫) অনুচ্ছেদ অমান্য করে আদালতের ভেতর লোহার খাঁচা বসানোর কার্যক্রম কেন আইনগত কর্তৃত্ববহির্ভূত ঘোষণা করা হবে না, রুলে তা জানতে চাওয়া হয়। আদালতের কক্ষ থেকে লোহার খাঁচা অপসারণ করে কাঠের ডক আবার প্রতিস্থাপনে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে কেন নির্দেশ দেওয়া হবে না, তা-ও রুলে জানতে চাওয়া হয়।



Source link

Share this post

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *