অধস্তন আদালতে আইনজীবীদের থেকে বিচারক নিয়োগসহ ১১ দফা প্রস্তাবনা
বিচার বিভাগের পূর্ণ স্বাধীনতা এবং সারা দেশের আইনজীবীদের অধিকার প্রতিষ্ঠায় ১১ দফা প্রস্তাবনা ঘোষণা করছে বাংলাদেশ আইনজীবী অধিকার পরিষদ। জাতীয় প্রেসক্লাবে শনিবার (২১ সেপ্টেম্বর) বিকেলে এক আলোচনা সভায় এসব দাবি জানানো হয়।
আলোচনা সভায় গণঅধিকার পরিষদের মানবাধিকার বিষয়ক সম্পাদক অ্যাডভোকেট খালিদ হাসান বাংলাদেশ আইনজীবী অধিকার পরিষদের পক্ষ থেকে ১১ দফা প্রস্তাবনা তুলে ধরেন।
দাবিগুলো হলো
১. উচ্চ আদালতে বিচারপতি নিয়োগ আইন প্রণয়ন করতে হবে এবং বিচারপতি অপসারণে সুপ্রিম জুডিসিয়াল কাউন্সিলের বিধান সংবিধানে পুনর্বহাল করতে হবে।
২. উচ্চ আদালতে আইন কর্মকর্তা নিয়োগে অ্যাটর্নি সার্ভিস এবং জেলা আইন কর্মকর্তা নিয়োগে ডিস্ট্রিক্ট অ্যাটর্নি সার্ভিস আইন প্রণয়ন করতে হবে ও সম্মানীভাতা বৃদ্ধি করতে হবে।
৩. বিচার বিভাগের পূর্ণ স্বাধীনতা ও আইনের শাসন নিশ্চিতে আলাদা সুপ্রিম কোর্ট সচিবালয় প্রতিষ্ঠা করতে হবে।
৪. হাইকোর্ট ও জজ কোর্টের বিতর্কিত বিচারকদের আশু অপসারণ করতে হবে। কোর্ট-কাচারি থেকে দুর্নীতি, ঘুষ, অনিয়ম বন্ধ করতে হবে।
৫. আইনজীবী সুরক্ষা আইন প্রণয়ন, দেশ-বিদেশে আইনজীবীদের প্রশিক্ষণ ও নবীন আইনজীবীদের ভাতার ব্যবস্থা করতে হবে।
৬. ওয়ারেন্ট অব প্রিসিডেন্স অনুযায়ী আইনজীবীদের অবস্থান সুনির্দিষ্টকরণ, বেনোভোলেন্ট ফান্ড বৃদ্ধি, জীবদ্দশায় বেনেভোলেন্ট ফান্ড প্রদান, আইনজীবী কল্যাণ ব্যাংক, হাসপাতাল তৈরি ও স্বাস্থ্যবীমা চালু করতে হবে।
আরও পড়ুন: বিচার বিভাগে আইন মন্ত্রণালয়ের কর্তৃত্ব বিলোপ করতে হবে: প্রধান বিচারপতি
৭. বাংলাদেশ বার কাউন্সিল, সুপ্রিম কোর্ট বার ও জেলা বার অ্যাসোসিয়েশনকে সর্বজনীন করতে প্যানেলভিত্তিক নির্বাচন বন্ধ করতে হবে; বাংলাদেশ বার কাউন্সিল শক্তিশালীকরণে নির্বাচিত সাধারণ সদস্যসংখ্যা বৃদ্ধি, বাংলাদেশ বার কাউন্সিল পরীক্ষা নিয়মিতকরণ ও পরীক্ষা পদ্ধতির সংস্কার; দলীয় বিবেচনায় আইনজীবী নিয়োগের পথ বন্ধ করতে হবে।
৮. অধস্তন আদালতে সহকারী জজ ও জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট নিয়োগে আইনজীবী হিসেবে ৫ বছর প্র্যাকটিসের অভিজ্ঞতা সংক্রান্ত বিধান অন্তর্ভুক্ত করতে হবে।
৯. বিচারকার্য দ্রুত নিষ্পত্তির লক্ষ্যে জেলা পর্যায়ে সিভিল ক্ষেত্রে জেলা জজ আদালত ও ক্রিমিনাল ক্ষেত্রে দায়রা জজ আদালত পৃথকীকরণ করতে হবে। আদালত সংখ্যা ও সম্মানীভাতা বৃদ্ধি করতে হবে।
১০. ব্রিটিশ ও পাকিস্তানি আমলের আইনের প্রয়োজনীয় সংস্কার করতে হবে এবং ৩০ লাখ মামলার ভার থেকে জাতিকে মুক্ত করতে অবিলম্বে বিচার পদ্ধতির সংস্কার ও বিশেষ ট্রাইব্যুনাল গঠন করতে হবে।
১১. আইন শিক্ষার মানোন্নয়নে নতুন পাঠ্যক্রম প্রণয়ন ও ল’ কলেজগুলোকে ঢেলে সাজাতে যুগোপযোগী পাঠ্যক্রম, পূর্ণকালীন শিক্ষক নিয়োগ ও স্বতন্ত্র পে স্কেল দিতে হবে এবং একটি স্বতন্ত্র আইন বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করতে হবে।
প্রসঙ্গত, বাংলাদেশ আইনজীবী অধিকার পরিষদ, গণঅধিকার পরিষদের ভ্রাতৃপ্রতিম সংগঠন হিসেবে আইনজীবীদের অধিকার প্রতিষ্ঠায় কাজ করে যাচ্ছে। এই আলোচনা সভা থেকে আইনজীবী অধিকার পরিষদের নতুন কমিটি ঘোষণা করা হয়।
এ সময় নুরুল হক নুর অ্যাডভোকেট গোলাম সওয়ার জুয়েল আহ্বায়ক, অ্যাডভোকেট সরকার নুরে এরশাদ সিদ্দিকীকে সদস্য সচিব করে বাংলাদেশের আইনজীবী অধিকার পরিষদের কমিটি ঘোষণা করেন।
Leave a Reply