চট্টগ্রাম বারে ১৩২ বছরের ইতিহাসে নজিরবিহীন ঘটনা : বিনা ভোটে জয়ী বিএনপি-জামায়াতপন্থিরা!


ভোট ছাড়াই চট্টগ্রাম জেলা আইনজীবী সমিতির ২১টি পদে নির্বাচিত হতে যাচ্ছেন বিএনপি ও জামায়াতপন্থি আইনজীবীরা। শুক্রবার (১১ এপ্রিল) মনোনয়ন জমা দেওয়ার শেষ দিনে প্রতিটি পদের বিপরীতে শুধুমাত্র একজন করে প্রার্থী মনোনয়নপত্র দাখিল করেন। যাচাই-বাছাই শেষে তাদের মনোনয়ন বৈধ ঘোষণা করা হয়।

ফলে আজ শনিবার (১২ এপ্রিল) আনুষ্ঠানিকভাবে তাদের বিজয়ী ঘোষণা করা হবে। ১৩২ বছরের ইতিহাসে এ ধরনের ঘটনা নজিরবিহীন বলে মন্তব্য করেছেন সংশ্লিষ্ট আইনজীবীরা।

তফসিল ঘোষণার পর আওয়ামী লীগ ও এলডিপি সমর্থিত আইনজীবীদের মনোনয়ন সংগ্রহে বাধা দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। মনোনয়ন ফরম সংগ্রহ করতে গিয়ে হট্টগোলের শিকার হওয়ার পাশাপাশি ভুক্তভোগীরা লিখিত অভিযোগ দিলেও তা আমলে নেয়নি কর্তৃপক্ষ।

সূত্র জানায়, পদের বণ্টনে বিএনপি সমর্থিত আইনজীবীরা সভাপতি, সাধারণ সম্পাদক ও সিনিয়র সহ-সভাপতিসহ ১৪টি এবং জামায়াত সমর্থিত আইনজীবীরা ৭টি পদ পেয়েছেন।

নির্বাচিত হতে যাওয়া আইনজীবীদের মধ্যে রয়েছেন—

সভাপতি: আবদুস সাত্তার
সাধারণ সম্পাদক: হাসান আলী চৌধুরী
সিনিয়র সহ-সভাপতি: কাজী মো. সিরু
সহ-সভাপতি: আলমগীর মোহাম্মদ ইউনুস
সহ-সম্পাদক: ফজলুল বারী
অর্থ সম্পাদক: আনোয়ার হোসেন
পাঠাগার সম্পাদক: তৌহিদুল ইসলাম
তথ্য ও প্রযুক্তি সম্পাদক: আবদুল জব্বার
সাংস্কৃতিক সম্পাদক: আশরাফী বিনতে মোতালেব
ক্রীড়া সম্পাদক: মঞ্জুর হোসেন

সদস্য পদে নির্বাচিত হচ্ছেন: আহসান উল্লাহ, আসমা খানম, বিবি ফাতেমা, মেজবাহ উল আলম, রায়হানুল ওয়াজেদ চৌধুরী, রাহিলা গুলশান শাহেদ হোসেন, হেলাল উদ্দিন, রোবায়তুল করিম, মোহাম্মদ মোরশেদ ও সাজ্জাদ কামরুল হোসেন।

এর আগে ৮ এপ্রিল তফসিল ঘোষণার পর ১০ এপ্রিল ছিল মনোনয়ন ফরম সংগ্রহের শেষ দিন। সেদিন বিএনপি ও জামায়াত ছাড়া অন্য দলের সমর্থিত আইনজীবীরা মনোনয়ন নিতে গেলে বাধার সম্মুখীন হন বলে অভিযোগ ওঠে।

আওয়ামী লীগপন্থি সভাপতি পদপ্রত্যাশী অ্যাডভোকেট আবদুর রশিদ অভিযোগ করেন, আইনজীবীদের ৯৮ শতাংশ ভোট দিতে চাইলেও কিছু ব্যক্তি অনাস্থা প্রকাশ করে সমিতির ঐতিহ্য ক্ষুণ্ন করেছেন। এমনকি এলডিপি সমর্থিত শাহাদাত হোসেন, যিনি একজন সরকারি পিপি, তিনিও ফরম নিতে পারেননি বলে জানান।

এ বিষয়ে আইনজীবী সমিতির সাবেক সাধারণ সম্পাদক এ এইচ এম জিয়া উদ্দিন বলেন, অতীতে রাজনৈতিক ভিন্নমত থাকা সত্ত্বেও নির্বাচনে অংশগ্রহণে কোনো বাধা ছিল না। বর্তমানে যা ঘটছে, তা দুঃখজনক।

আওয়ামীপন্থি প্রার্থীরা লিখিত অভিযোগ দিলেও কোনো কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি। মুখ্য নির্বাচনী কর্মকর্তা তারিক আহমেদ জানান, প্রত্যেক পদের বিপরীতে একজন প্রার্থী থাকায় যাচাই-বাছাই শেষে তাদের বিজয়ী ঘোষণা করা হবে।

এর আগে ১০ ফেব্রুয়ারি ভোট হওয়ার কথা থাকলেও নির্বাচন কমিশনের কর্মকর্তারা ৪ ফেব্রুয়ারি পদত্যাগ করেন। এর ফলে ১৬ ফেব্রুয়ারি গঠিত অ্যাডহক কমিটির অধীনে নতুন তফসিল অনুযায়ী ১৬ এপ্রিল নির্বাচন হওয়ার কথা থাকলেও আর ভোট হচ্ছে না।



Source link

Share this post

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *