পুলিশি কার্যক্রমে স্বচ্ছতা আনতে মামলাগুলো জনগণের কাছে উন্মুক্ত করতে হবে


বর্তমানে চলমান পুলিশের সেবাধর্মী কার্যক্রমের যথেষ্ট উন্নতি প্রয়োজন। পুলিশের কার্যক্রমের স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করতে থানাভিত্তিক মামলা কার্যক্রমের অগ্রগতি সংক্রান্ত তথ্য জনগণের জন্য উন্মুক্ত রাখা উচিত ও পুলিশ সদর দপ্তরের কার্যকর মনিটরিংয়ের মাধ্যমে বহুল প্রচারসহ গতিসঞ্চার করা অপরিহার্য বলে সুপারিশ করেছে পুলিশ সংস্কার কমিশন৷ একই সঙ্গে নাগরিক নিরাপত্তা কমিটি গঠন আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি পর্যালোচনা ও উন্নতির জন্য এলাকায় (প্রতি থানা) নাগরিক নিরাপত্তা কমিটি গঠন করারও সুপারিশ করেছে।

শনিবার (৮ ফেব্রুয়ারি)পুলিশ সংস্কার কমিশনের জনকেন্দ্রিক ও জনবান্ধব পুলিশিং সংক্রান্ত বিষয়ে কমিশন এসব সুপারিশ করেছ৷ এর আগে দুপুরে প্রধান উপদেষ্টার কাছে পুলিশ সংস্কার কমিশন তাদের চূড়ান্ত সুপারিশ জমা দিয়েছেন।

সংস্কার কমিশনের সুপারিশে বলা হয়েছে, নাগরিক নিরাপত্তা কমিটি গঠন আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি পর্যালোচনা ও উন্নতির জন্য এলাকায় (প্রতি থানা) নাগরিক নিরাপত্তা কমিটি গঠন করা যায়। নাগরিক সচেতনতা তৈরির জন্য শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে গঠনমূলক পাঠ/চর্চা অন্তর্ভুক্ত করা যায়। এ লক্ষ্যে বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের কারিকুলামে পুলিশিং ও আইন সংক্রান্ত বিষয়াদি রাখা জরুরি। যেমন: ‘একদিন পুলিশ হয়ে দেখুন’ এ ধরনের রোল প্লে করার মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের মধ্যে পুলিশের কাজকর্ম সম্পর্কে ইতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গি তৈরি হবে।

সুপারিশে আরো বলা হয়েছে, টাউন হল সভা- জনগণ ও পুলিশের মধ্যে আস্থা পুনর্গঠন ও পারস্পরিক সম্প্রীতি বৃদ্ধির লক্ষ্যে নিয়মিত টাউন হল সভার আয়োজন করা যেতে পারে। স্থানীয় পর্যায়ে সংলাপে স্থানীয় জনপ্রতিনিধি, স্থানীয় প্রশাসনের প্রতিনিধি থেকে শুরু করে স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থী পর্যন্ত বিভিন্ন পর্যায়ের নাগরিকের প্রতিনিধিত্ব থাকবে।

আরও পড়ুনজনপ্রশাসন সংস্কার কমিশনের একটি প্রস্তাব বিচার বিভাগের স্বাধীনতায় হস্তক্ষেপ

পুলিশের আলাদা পিআর (পাবলিক রিলেশন) স্ট্র্যাটেজি থাকতে হবে, যাতে পুলিশের সঙ্গে জনগণের যোগাযোগ আরও জোরদার হয়। যেমন- পুলিশের বিভিন্ন হটলাইনের ব্যাপারে মিডিয়ার মাধ্যমে প্রমোশন করা যেতে পারে। বিশেষ করে নারীদের জন্য পুলিশের যেই সেবাগুলো আছে তা আরও প্রচার-প্রচারণার দরকার আছে।

এছাড়া কমিউনিটি পুলিশিং বর্তমানে প্রচলিত কমিউনিটি পুলিশিং ব্যবস্থাকে আরও শক্তিশালী ও সম্প্রসারণ করে এটিকে চেক এন্ড ব্যালেন্স-এর একটি পদ্ধতি হিসেবে প্রস্তাব করা হলো, যা পুলিশের জবাদিহিতা বৃদ্ধি করবে এবং পুলিশের কাজে জনসম্পৃক্ততা নিশ্চিত করবে।

পুলিশের সেবামূলক ও জনবান্ধব কার্যক্রম: বর্তমানে চলমান পুলিশের সেবাধর্মী কার্যক্রমের যথেষ্ট উন্নতি প্রয়োজন। আরও আন্তরিক ও নিষ্ঠার সঙ্গে জনবান্ধব পুলিশিং-এর জন্য জোর প্রচেষ্টা ও প্রচার প্রয়োজন। পুলিশকে সেবাধর্মী ও জনবান্ধব হিসেবে প্রতিষ্ঠা করার লক্ষ্যে তথ্য মন্ত্রণালয়ের সহায়তায় পুলিশ সদর দপ্তরের কার্যকর মনিটরিংয়ের মাধ্যমে বহুল প্রচারসহ গতিসঞ্চার করা অপরিহার্য।

পুলিশের কার্যক্রমের স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করতে থানাভিত্তিক মামলা কার্যক্রমের অগ্রগতি সংক্রান্ত তথ্য জনগণের জন্য উন্মুক্ত রাখা উচিত।

জনবান্ধব পুলিশ গঠনে একটি অন্তর্ভুক্তিমূলক পদক্ষেপ: বাংলাদেশে বিগত ২০২৪ সালের জুলাই-আগস্টের গণঅভ্যুত্থানে আহত ব্যক্তিদের শিক্ষাগত যোগ্যতা ও অন্যান্য প্রাসঙ্গিক বুদ্ধিভিত্তিক সক্ষমতা বিবেচনায় নিয়ে রাষ্ট্রের বিভিন্ন বিভাগের পাশাপাশি পুলিশ বিভাগেও তাদের কর্মসংস্থানের সুযোগ তৈরির সুপারিশ করা হলো। এই উদ্যোগ একদিকে পুলিশের সঙ্গে জনগণের সম্পর্ক উন্নত করবে, অন্যদিকে আহত ব্যক্তিদের সমাজের মূলধারায় ফিরিয়ে আনতে সহায়ক হবে।



Source link

Share this post

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *