ছাত্রদের ফ্রি আইনি সহায়তা দেওয়ায় আইনজীবীকে তুলে নিয়ে যায় ডিবি পুলিশ


কোটা সংস্কারের দাবিতে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের বিনামূল্যে (ফ্রি) আইনি সহায়তা দেওয়ায় সুপ্রিম কোর্টের এক আইনজীবীকে পুলিশের গোয়েন্দা শাখা (ডিবি) কর্তৃক তুলে নিয়ে যাওয়ার অভিযোগ উঠেছে।

ভুক্তভোগী আইনজীবী আল মামুন রাসেল নিজেই ল’ইয়ার্স ক্লাব বাংলাদেশ ডটকমকে এ তথ্য জানিয়েছেন।

ঘটনার বর্ণনা দিতে গিয়ে আল মামুন রাসেল জানান, গত ৩১ জুলাই ‘মার্চ ফর জাস্টিস’ নামে নতুন কর্মসূচি ঘোষণা করে কোটা সংস্কার আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা। এতে দেশের সকল আদালত, ক্যাম্পাস ও রাজপথে এই কর্মসূচি পালনের আহ্বান জানানো হয়।

তিনি বলেন, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ‘মার্চ ফর জাস্টিস’ কর্মসূচিতে অংশ নিতে আদালতে যাওয়ার পথে ডিবি পুলিশ আমাকে তুলে নিয়ে যায়। শিক্ষার্থীদের বিনামূল্যে আইনি সহায়তা দেওয়ার বিষয়ে নানা প্রশ্ন করেন। এর মধ্যে এই সেবা কেন দিচ্ছি এবং ফান্ড কোথা থেকে পাচ্ছি সে বিষয়ে প্রশ্ন তোলেন।

এই আইনজীবী বলেন, পরবর্তীতে ছাত্রদের পক্ষে আদালতে মামলা পরিচালনা না করার শর্তে আমাকে ছেড়ে দেওয়া হয়। তবে আমি একজন সাবেক শিক্ষার্থী ও রাষ্ট্রের সচেতন নাগরিক হিসেবে সামাজিক দায়বদ্ধতা থেকে ডিবির দেওয়া শর্ত ভঙ্গ করে আইনি সহায়তা অব্যাহত রাখি।

আরও পড়ুন: হারুনের তুলে নেওয়া সেই আইনজীবীর বাড়িতে আবার হামলা

আইনজীবী আল মামুন রাসেল বলেন, এরপর অবশ্য শুরু হয় নতুন যন্ত্রণা। চেম্বারে ডিজিএফআই থেকে লোক এসে এসোসিয়েটসদের কাছে আমার বিষয়ে নানা তথ্য সংগ্রহ করার চেষ্টা করে এবং আমাকে হুমকি-ধামকি দিয়ে মানসিকভাবে চাপে রাখার চেষ্টা করে যেন আমি আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের আইনি সহায়তা দেওয়া থেকে বিরত থাকি।

উল্লেখ্য, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের যৌক্তিক আন্দোলনের শুরু থেকে অন্যান্য পেশাজীবীদের পাশাপাশি ছাত্রদের পাশে দাঁড়িয়েছিলেন লিগ্যাল সলিউশন চেম্বার (এলএসসি)। এই চেম্বারের প্রধান সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে সাবেক শিক্ষার্থী আল মামুন রাসেল।

এই পর্যন্ত ঢাকা শহরে ৫০টি থানায় ১৫ই জুলাই এর সংঘর্ষ এর পর ২৩৫টি মামলা হয়েছে এবং প্রায় ১০ হাজার গ্রেপ্তার হয়েছে। এর মধ্যে আন্দোলনকারী ছাত্ররা বেশি। এতে ছাত্ররা দিশেহারা হয়ে পড়ে, তখন আল মামুন রাসেল ও তার ১২ সদস্য টিম বিনা খরচে ছাত্রদের সহযোগিতায় এগিয়ে আসে। ঢাকায় কেউ গ্রেপ্তার হলে দ্রুত যোগাযোগ করার আহ্বান জানান তারা। একইসঙ্গে সম্পূর্ণ বিনামূল্যে আইনি সহায়তা দেবেন বলে অঙ্গীকার ব্যক্ত করেন।

এই বিষয়ে আল মামুন রাসেল বলেন, ছাত্ররা দেশ সংস্কারে নেমেছে, আমাদের দায়িত্ব হলো এই নিরিহ ছাত্রদের পাশে দাঁড়ানো। ওরা আর্থিকভাবে স্বাবলম্বী নয়, তাদের পাশে দাঁড়ানো আমাদের দায়িত্ব। আমরা এই পর্যন্ত এইচএসসি পরিক্ষার্থীসহ প্রায় শতাধিক ছাত্রদের বিনা খরচে আইনি সেবা দিয়েছি।



Source link

Share this post

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *